Posts

Monday, May 11, 2020

May 11, 2020

Renu o koyekti Projapoti

রেনু ও কয়েকটি প্রজাপতি

কলমে - দিব্যজিৎ সরকার




# রেনু ও কয়েকটি প্রজাপতি
# কলমে - দিব্যজিৎ সরকার
'দেখো তো রেনু আকাশে কি দেখা যায়?'
'ঐটা তো এরোপ্লেন, মামা।'
'হ্যাঁ,তুমি এর আগে কখনো এরোপ্লেন দেখেছো?'
'হ্যাঁ।'
'কোথায় দেখেছো?ছবিতে?'
'না...আমি তো এরোপ্লেন এ চড়েছি।'
কথাটা শুনে রেনুর মামা অনল বেশ অবাক হলো তার বোনঝি যা বলছে সেটা তার কাছে অসম্ভব মনে হলো কারণ, তার বোন রূপা আর তার স্বামি তপন  তাকে নিয়ে বিমানে চেপে কোথাও বেড়াতে গেছে সেটা তার মনে পরেনা।আর তাছাড়া সে  তো রেনুর জন্মের পর নিয়মিত তার বোনদের খবর রাখতো কখনো যে তারা এরোপ্লেনে চড়ে কোথাও গেছে এমনটা তো শোনেনি।যাই হোক রেনুকে অনল আর কিছু জিজ্ঞেস করলো না ভাবলো মা বাপ মরা মেয়ে,কি বলতে কি বলেছে।অনল বললো যাও রেনু ভিতরে গিয়ে অরির সাথে খেলো,অরি অনল এর ই সাত বছরের ছেলে।
রেনুর বয়সও এখন সাত বছর।তার বয়স যখন 9 মাস, তখন রাস্তা দিয়ে আসার সময় তার মা বাবা কে  একটা লরি এসে অ্যাকসিডেন্ট করে...তারপর সব শেষ।তারপর থেকে রেনু তার ঠাকুরদা ব্রজবিহারী বাবুর কাছেই মানুষ,যদিও অনল অনেকবার বোনঝিকে এনে নিজের কাছে রাখার চেষ্টা করেছে,ব্রজবিহারী বাবুকে বলেছে এই গ্রামে থাকলে রেনুর পড়ার কোনো উন্নতি হবেনা তার থেকে আমি রেনুকে আমার সাথে কলকাতায় নিয়ে যাই ঐখানে অরির সাথে থাকলেই ওর ভালো হবে।কিন্তু ব্রজবিহারী বাবু বার বার বলেছেন দেশের আসল বীজ হলো গ্রামে,দেশের যত বড়ো বড় জ্ঞানী,মহাপুরুষ আছে তাদের বেশির ভাগ ই কিন্তু গ্রামে বড়ো হয়েছে,আর রেনুও তেমনি দাদুর গলা জড়িয়ে ধরে ওই বুড়ো টাকেই সাই দিয়েছে।তাই অগত্যা বার বার নিরাশ হয়েই অনল কে ফিরে আসতে হয়েচে।
কিন্তু দিন সাতেক আগে হঠাৎ অনল এর কাছে ফোন আসে,সে জানতে পারে যে ব্রজবিহারী বাবুর হার্ট অ্যাটাক হয়েছে,পরদিন ই অনল ছুটে যায় তাকে দেখতে,গিয়ে দেখে ব্রজবিহরী বাবু কে কাছের ই এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।হাসপাতালে একটা বেঞ্চিতে পাশের বাড়ির পরিতোষ বাবুর সাথে বসে আছে রেনু।অনল কে দেখে পরিতোষ বাবু যেনো পরম সুখে এক গাল হাসি নিয়ে ছুটে আসে।অনল তাকে বলে 'কাকাবাবুর শরীরের অবস্থা এখন কেমন ?'
পরিতোষ বাবু বলেন ' কাল রাত্রে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পরেই আমরা নিয়ে এসেছিলাম বলে এই যাত্রায় রক্ষে পেলেন,ডাক্তার বলেছে আর একটু দেরি হলেই আর করার কিছু ছিলনা।ডাক্তার রা কাল রাত্রে অপারেশন করেছে এখন ভালো আছে। কিন্তু!'
অনল বলো ' কিন্তু কি?'
পরিতোষ বাবু রেনুর দিকে ইশারা করে বললেন
' কিন্তু সমস্যা হোয়েছে এই মেয়েকে নিয়ে,কতবার বলেছি চল আমার সাথে বাড়ি যাই,কিন্তু দাদু কে ছেড়ে কোথাও যাবার নাম নেই,কাল রাত থেকে নাওয়া খাওয়া ভুলে এই বেঞ্চিতে বসে আছে।'
অনল বললো ' ঠিক আছে,আমি দেখছি '
অনল রেনু কে গিয়ে বললো ' কেমন আছো রেনু? '
রেনু মুখ গোমড়া করে জবাব দিল ' ভালো '
তারপর অনল তার পকেট থেকে একটা ক্যাডবেরি রেনু কে দিল,রেনু ভাবলেশহীন ভাবে সেটা নিলো।
এরপর অনল সোজা চলে গেলো ডাক্তার নিজাম এর কাছে,তাকে নিয়ে গেলো পরিতোষ বাবু ,বললো যে ইনি ব্রজ বাবুকে দেখছেন।
অনল তাকে বললো 'ডাক্তার বাবু patient এর সাথে কখন দেখা করা যাবে?'
ডাক্তার বাবূ‌ বললেন 'একটু আগেই পেশেন্ট এর জ্ঞান ফিরেছে,এখন ঘুমিয়ে আছেন,একটু পরেই চাইলে দেখা করতে পারেন কিন্তু দুই জনের বেশি কোনো মতই না।'
'আর রুগী কবে বাড়ি যেতে পারবে?'
'রুগীর এত বড়ো একটা অপারেশন হলো এক সপ্তাহ তো লাগবেই ছুটি দিতে।'
আধা ঘন্টা পরে রেনু আর অনল ব্রজ বাবু কে দেখতে গেলো।অনল বললো 'আপনার এখন এমন অবস্থা এই অবস্থায় তো আপনার পক্ষে রেনুর দেখা শোনা করা সম্ভব না তার থেকে আমি ওকে আমার সাথে বাড়ি নিয়ে যাই,শরীর সুস্থ হলে না হয় ওকে নিয়ে আসবেন।'
প্রথমে অসম্মতি থাকলেও পরে রাজি হলেন বললেন 'ঠিক আছে নিয়ে যাও'।
আর কথাটা বলে যখন রেনু কে নিয়ে ব্রজ বাবুর ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে আসছে তখন পিছন ফিরে দেখল ব্রজ বাবুর ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি,কিন্তু এই হাসি যেনো স্বাভাবিক না এর উৎস যেনো কোনো এক অন্ধকার জগতে।তখনই রেনু কে নিয়ে অনল সোজা বাড়ি চলে আসে।
আজ সকালে কোম্পানির দিকে যাওয়ার সময় অনল দেখলো রেনু, অরি র সাথে বসে খেলছে কিন্তু রেনুর মধ্যে কোনো চঞ্চলতা নেই।এই বয়স এর বাচ্চা রা খেলার সময় চেঁচামেচি করবে,যার সাথে খেলছে তার চুল ধরে টানবে নাহলে, কামড়ে দেবে এমন টাই অনল চিরকাল দেখে এসেছে। অনল নিজেই ছোটবেলায় তার বোন রূপার সাথে খেলার সময় এমনটাই করেছে। কিন্তু তার ভাগ্নি টি হয়েছে তার উল্টো তার চোখ দুটো দেখলেই মনে হয় যেনো কোনো পাখি উরে উরে ক্লান্ত হয়ে নদীর ধরে কোনো গাছের ডালে বসে এক দৃষ্টি তে নদীর দিকে তাকিয়ে আছে।অনল পরক্ষণেই ভাবলো এমন শান্ত মেয়েই তো তার দরকার ,যে কোনো কথা বলবে না যাই হয়ে
যাক চুপ চাপ শুধু বসে বসে দেখবে।
সে মনে মনে বললো না আর দেরি করলে চলবে না, এমনিই অনেক দেরি করে ফেলেছে সে,আজ রাতেই কাজ টা তাকে সেরে ফেলতে হবে।যাবার পথে অনল তার স্ত্রী পৃথা কে বলে গেলো 'তোমরা সব খেয়ে দেয়ে শুয়ে পরো আমার ফিরতে রাত হবে,আর আমি বাইরে থেকে খেয়ে আসবো।'
পৃথা বললো 'ঠিক আছে , তবে এখন ছেলে বড়ো হচ্ছে রোজ রাতে কি ঐ সব ছাই পাশ না খেয়ে এলেই না'
এক ধমক দিয়ে অনল বলে উঠলো 'আহঃ এত জ্ঞান কবজিও না তো।'
বলেই হন হন করে বেরিয়ে গেলো।
রাত বারোটা বাজে পৃথা অরি আর তাদের পাশের  ঘরে রেনু সবাই ঘুমিয়ে গেছে।এমন সময় অনল চাবি দিয়ে বাড়ির দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলো,রোজ রাতে ফিরতে দেরি হয় বলে গেট এর একটা চাবি সব সময় তার কাছে থাকে।রাত্রে এসে দরজা খোলার জন্য স্ত্রী কে বিরক্ত করে না সে।কিন্তু অন্য সব দিনের মত আজ ও সে মদ খেয়ে এসেছে।মদ না খেলে তার মাথা কাজ করেনা,নিজেকে অজ্ঞান মনে হয়,কিন্তু মদ খেলেই সে তার সজ্ঞান এ জ্ঞানী হয়ে ওঠে,কারণ আজ সে যা করতে যাচ্ছে তার জন্য প্রয়োজন স্নায়ুর ওপর অসম্ভব রকমের দখল।
জানালা দিয়ে পূর্ণিমার আলো ঘরে ঢুকছে আর তাতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে অনল এর হাতে আছে একটা কাচের বাক্স তার মধ্যে একটু পর পর ঝন ঝন করে উঠছে একটা বিছা আর এই বিছার এক কামড়েই  যাবে কাম তামাম, এই ভেবে তার মধ্যে এক ভীষণ রকমের খুশি তৈরি হচ্ছে,মনে হচ্ছে যেন সেই ই এই পৃথবীতে একা বিরাজমান, সে ই এই সমগ্র বিশ্বের অধিপতি।আজ তার দীর্ঘ সাত বছরের অপেক্ষার আজ অবসান হতে চলেছে।
আর এই গল্পের শুরু হযেছিল আজ থেকে 9 বছর আগে। তখন সদ্য কলেজ পাশ করেছে তথাগত চক্রবর্তী র এক মাত্র মেয়ে রূপা,নামের মতই সে ছিল ভীষণ সুন্দর , বাড়িতে রোজ আসছে নানান ছেলের সম্বন্ধ  কিন্তু বিখ্যাত t c plastic কোম্পানির মালিক তথাগত বাবুর কাউকেই পছন্দ হচ্ছেনা।কিন্তু রূপা তখন তার কলেজ এর বন্ধু তপন এর প্রেমে মশগুল ,কিন্তু কোনোমতেই বাবা কে সে বলে উঠতে  পারছেনা তপন এর কথা কারণ এক তো তপন ব্রাহ্মণ না,আর সদ্য কলেজ শেষ করে এখনও কোনো কাজ জোগাড় করে উঠতে পারেনি সে আর সে হলো গ্রাম এর এক প্রাথমিক স্কুল মাস্টারের ছেলে। তাই এক রাতের অন্ধকারে তপনের সাথে রূপা পালিয়ে যায়,তারপর অনেক খোজ খবর করে তথাগত বাবু সব জানতে পেরে রেগে গিয়ে বলেন আমার মেয়ে আজ থেকে কোনো মেয়ে নেই, তার নাম যেনো এই বাড়িতে উচ্চারণ না করা হয়।
তার পর কেটে যায় আরো দুই বছর ততদিনে তথাগত বাবুর শরীর অনেক ভেঙে গেছে,স্ত্রী গত হয়েছেন, ব্যাবসা তুলে দিয়েছিলেন ছেলে অনল এর হাতে কিন্তু তার ব্যাবসার দিকে কোনো মন নেই,শুধু ফুর্তি,নেশা ভাং করে একেবারে উচ্ছন্নে গেছে ,ছেলের মতি ফিরিয়ে আনতে তারই এক বন্ধুর কন্যা পৃথা কে ছেলের সাথে বিয়ে দিয়েছেন কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি।এরই মধ্যে একদিন চিঠি পেলেন রূপার তার মধ্যে সে তার বাবার কাছে অনেক বার ক্ষমা ছেয়েছে আর একটা ফুটফুটে বাচ্চা মেয়ের ছবি পাঠিয়ে লিখেছে বাবা এই হলো তোমার নাতনি রেনু,আশির্বাদ করো আর পারলে একবার এসে দেখে যেও। নাতনির মুখ দেখে তথাগত বাবুর মন গলে গেছিলো কিন্তু মেয়ের কাছে গিয়ে তাকে বুকে টেনে নিয়ে ক্ষমা করার স্বভাব তার নেই তাই আর তিনি রপাকে দেখতে যান নি,এর কয়েকদিন পরেই তিনি মারা যান।কিন্তু তার মৃত্যুর পর উকিল এসে অনল কে জানায় যে কোম্পানির মালিকানা তথাগত বাবু অনল কে দিয়ে গেছেন আর তার সমতুল পরিমাণ টাকা তিনি রূপার নামে ব্যাংক এ রেখে গেছেন ,আর কোনো একজনের অবর্তমানে তার সম্পত্তি পাবে তার সন্তান আর একজনের এবং তার সন্তানের অবর্তমানে অপরজন সেই সম্পত্তি পাবে।
কিন্তু অনলের দরকার ছিল অনেক অনেক টাকা নেশা,মদ,ফুর্তি,রেস, জুয়া এসব করে এখন সে সর্বশান্ত,বন্ধু বান্ধব সবার কাছে লাখ লাখ টাকা ঋণ তাই অনল বুদ্ধী করে ফেললো টাকা পেতে গেলে তাকে দুনিয়া থেকে সরাতে হবে তার বোন কে,বোন বাড়ি ছেড়ে গেলেও তথাগত বাবুকে না জানিয়ে সে খোজ নিত তার বোনের তাই রূপা কি করে কোথায় যায় সব ছিল তার নখদর্পণে তাকে মারার কৌশল বের করতে তার এক সেকেন্ড সময় লাগলো না,রোজ বিকাল পাঁচটায় যখন রূপা স্কুটি নিয়ে অফিস থেকে ফেরে তখন পিছন থেকে লরি দিয়ে পিসে দিলেই হবে কার্য সিদ্ধি তাই এইমত অনল ঠিক করে ফেললো একজন কন্ট্রাক্ট কিলার কে কিন্তু যেদিন তাকে মারতে গেলো সেদিন রূপা স্কুটি তে না চড়ে,ফিরছিল তপনের বাইকে তাই আর উপায় না পেয়ে কিলার দুজন কেই শেষ করে ফেলে।অনলের এর পরের টার্গেট ছিল রেনু কিন্তু তার দাদুর জন্য সে কখনোই তাকে বাগে আনতে পারেনি,এতদিনের অপেক্ষার পর আজ এসেছে সুযোগ।
অনল খুব সাবধানে হাতে বিছার বাক্স নিয়ে রেনুর ঘরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে,রেনু তার ঘরে ঘুমিয়েও স্পষ্ট সব দেখতে পাচ্ছে , তার মামা তাকে মারার জন্যই ওই কুচকুচে কালো পোকাটা এনেছে সে তাও বুঝতে পারছে।আর এগুলো নতুন কিছু না যখন তার মামা তাকে এই বাড়িতে নিয়ে এসেছিল তখনই সে সব বুঝতে পেরেছিল।
অনল রেনুর ঘরের সামনে যেতেই তার মাথার ভেতর কি যেনো একটা নড়ে উঠলো,তারপর ভেতর থেকে তার ব্রেইন টা যেনো ছিরে যেতে লাগলো তারপর ভীষণ জোরে চিৎকার করে মেঝের উপর পড়ে গেলো,তার কান দিয়ে রক্ত বের হলো তার হাত থেকে বিছার বাক্স টা পড়ে ভেঙে গেলো আর বিছাটাও ছুটে কোথায় যেনো পালিয়ে গেলো,চিৎকার এর শব্দ শুনে পৃথা, ঘর থেকে বেরিয়ে এসে দেখলো মেঝেতে পড়ে আছে একটা লাশ আর চার পাশে কাচের টুকরো ছড়িয়ে আছে, পুলিশ এলো , পোস্ট মর্টেম এ কিছু ধরা পড়লো না  ফরেনসিক রিপোর্ট এ অনলের পাকস্থলী তে অ্যালকোহল পাওয়া গেলো,সবাই মনে করলো যে অতিরিক্ত মদ খাওয়া র জন্যই তার এই অবস্থা হোয়েছে।আর এই সব কিছু নির্বিকার ভঙ্গি তে বসে বসে দেখলো রেনু।
দুদিন পর সকালে ব্রজ বাবু রেনু কে নিতে এলেন, তিনি পরের দিন ই ফিট হয়ে যাওয়া সত্বেও তাকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হচ্ছেনা আর এদিকে অনলের খবর পাওয়ার পর একরকম ঝগড়া করে তিনি হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে এসেছেন।এসে তিনি পৃথা কে কথার ফাঁকে জিজ্ঞেস করলেন 'তোমরা এখন কি করবে কিছু ঠিক করেছ?'
পৃথা বললো যে 'কাকাবাবু দেখতেই তো পাচ্ছেন অবস্থা,উনি যা ঋণ করে গেছেন তাতে তো শোধ করাই আমার জন্য মুশকিল।যদিও বেশ কয়েকজন  দয়া দেখিয়ে বলেছেন আর টাকা দিতে হবেনা,আর বাদ বাকিদের টাকা এই বাড়িটা,আর ফ্যাক্টরি টা বিক্রি করে শোধ করবো।আর বাবা আজকে আমাদের নিয়ে যাবেন  ওই বাড়িতে।'
তারপর ব্রজ বাবু রেনু কে নিয়ে ওই বাড়ি থেকে বের হলেন।
আর কেউ না জানলেও কলেজে একসময় সাইকোলজির ছাত্র ব্রজবিহারী তরফদার জানেন অনলের মৃত্যুর কারণ। বাসে তার পাশের সিট এ বসে থাকা তার নাতনি রেনু কোনো সাধারণ মেয়ে না,তার মস্তিষ্কের আছে কিছু অসম্ভব ক্ষমতা,সে তার আগের জন্মের বলতে পারে,সে বলে যে সে আগের জন্মে ছিল পাইলট জনাথন হাঙ্কস,এক বিমান দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়।সে ভবিষ্যত্ ও দেখতে পারে,ব্রজ বাবুর যে অসুখ হবে সে ব্যাপারে আগেই বলেছিল সে,কিন্তু সে ভবিষ্যতের সব দেখতে পারেনা অদূর ভবিষ্যতে কোনো বিশেষ ঘটনা ঘটলে তখন সে সম্পর্কে সে বলে।আর তার আছে এক বিশেষ ধরনের হিপ্নটিস্মম ক্ষমতা যার দ্বারা সে অন্য একজনের ব্রেইন কে নিজের নিয়ন্ত্রণে এনে ইচ্ছা মত কাজ করাতে পারে,যার প্রমাণ তিনি প্রথম পান যখন তিনি রেনুকে একদিন স্কুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন এক পাগলা ষাঁড় রেনুর দিকে ছুটে আসছিল তখন হঠাৎ করেই সেই ষাঁড় রাস্তার উপর অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়,এই একই ক্ষমতার প্রয়োগ সে করেছে অনলের উপর।যেদিন তপন আর রূপার অ্যাকসিডেন্ট হয় সেদিন রেনু খুব কান্না করছিল হয়ত তাদের কে যেতে মানা করেছিল সে,কিন্তু 9 মাসের শিশুর কান্না বোঝার ক্ষমতা তাদের মতো সাধারণ মানুষের ছিলনা।যদিও রেনুর এই ক্ষমতার কথা তার দাদু ছাড়া আর কেউ জানেনা,আর কেউ হয়তো কোনো দিন জানবেও না।
ব্রজ বাবু পাশে তার নাতনির দিকে তাকালেন দেখলেন যে রেনুর চোখে মুখে এক দেবশিশুর মত  প্রশান্তির হাসি,তার চোখ দেখে মনে হলো কোনো পাখি যেনো খাঁচা থেকে মুক্ত হয়ে ডানা মেলে নীল আকাশে উড়ে যাচ্ছে।

Wednesday, October 30, 2019

October 30, 2019

Mother (Madeo) 2009 Korean Movie Review in Bangla

Mother(Madeo) 2009 Koran Movie Review



এখন যেই সিনেমা সম্পর্কে বলবো সেটি যারা কোরিয়ান থ্রিলার সিনেমা দেখতে পছন্দ করে তাদের অনেকেই দেখেছেন। 

ছবিটির নাম Mother (Madeo)।মুক্তি পায় 2009 সালে । Cannes Film Festival এ Un Certain Regard এ প্রতিযোগিতা করে।ছবিটি কান্স এ মুক্তি পায় 16 May,2009 এ আর দক্ষিন কোরিয়ায় মুক্তি পায় 28 May,2009 এবং দেশি,বিদেশি অনেক পুরস্কারে বিভিন্ন বিভাগে মনোনীত ও জয়ী হয়। 5 মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বানানো এই ছবিটি বক্স অফিসে 17 মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে। 2010 সালে বিভিন্ন পত্রিকার সেরা দশটি ছবির তালিকায় এটির নাম ছিল। 

ছবিটি পরিচালনা করেন Bong-Joon-Ho যিনি এই ছবির আগে Memories of murder এর মতো মাস্টারপিস পরিচালনা করেছিলেন এই Mother ছবিটিতেও তিনি তার দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তাছাড়াও Hong Kyung-pyo এর সিনেমাটোগ্রাফি আর Lee Byung-woo এর মিউজিক ও এক কথায় অনবদ্য। বেশ কতগুলি সিনে মিউজিক আর ক্যামেরার অসাধারন মেলবন্ধন টানটান উত্তেজনা তৈরী করেছে। তবে ছবিটি 18+ দের জন্য কারন একটি দৃশ্যে ন্যুডিটি এবং বেশ কয়েকবার  Violence দেখানো হয়েছে। 
এবার আসা যাক গল্পে-একজন বিধবা মা এবং তার মানসিক ভাবে অসমর্থ ছেলের গল্প হলো  Mother।একটি মেয়েকে খুন করা হয় এবং সেই খুনের আসামী হিসাবে Mother এর ছেলের জেল হয়। এইবার সেই মা কিভাবে ছেলেকে বাচাবেন এবং তিনি তাকে বাচানোর জন্য কতদূর পর্যন্ত যেতে পারেন সেটাই দেখানো হয়েছে এই ছবিতে। গল্প অনেকগুলি চমকে ভরপুর যেটি পরিচালক Bong এবং Park Eun-kyo রচনা করেছেন। যেটি শুধু থ্রিলার প্রেমীরাই না যেকোনো সিনেমা প্রেমিই ভীষনভাবে উপভোগ করবেন। 

ছবিতে সকলেই ভালো অভিনয় করেছেন তবে মুখ্য ভূমিকায় মানে মা এর চরিত্রে অভিনয় কারী Kim Hye-ja ছবিটিকে আলাদা মাত্রায় নিয়ে গেছেন আর ছেলের চরিত্রে Won Bin ও তার অসাধারণ অভিনয় দিয়ে তার চরিত্রের সাথে ন্যায় করেছেন। Moon Sae-kyung এর Edit করা 128 মিনিটের এই ছবিটি একবারও আপনাকে বোর করবে না এবং নিষ্পলক ভাবে সম্পূর্ন ছবিটিকে উপভোগ করবেন।একটি সিন এর পরের সিন কী হবে সেটা আপনি ভাবতেও পারবেন না আর সিনেমার শেষে আছে এক অভাবনীয় চমক। 

ধন্যবাদ।

Sunday, October 20, 2019

October 20, 2019

Abhiman

অভিমান




পথ খুঁজেছি পথের বাকে
হারিয়ে গেছি তখন যেন,
দুঃখ ভুলে সুখ খুঁজেছি 
তবুও খুঁজে পাইনি কেন?

ভুল বুঝেছি ভুল করেছি
চাইনি ক্ষমা ছুট্টে গিয়ে,
কাউকে খুঁজি তোমার মতো
স্বপ্নদেশে হন্যে হয়ে।

চাই যে শুধুই ভালো থেকো
পড়লে মনে হঠাৎ ডেকে,
মনের মাঝে ঠাঁই টি দিও
নতুন প্রেমের মানুষটিকে।

Sunday, September 22, 2019

September 22, 2019

Jokhon Tumi

যখন তুমি



যখন তুমি ফলাও ফসল
প্রখর রোদে ধানের ক্ষেতে,
তখন আমি ভাত মেখেছি
কাসার থালায় আলতো হাতে।

যখন তুমি আছো দাড়ায়
অস্ত্র হাতে সীমান্ত তে,
তখন আমি নিবিড় ঘুমে
শুয়ে নরম বিছানাতে।

যখন তুমি তীব্র গন্ধে 
নামছো কোনো নর্দমাতে,
তখন আমি নাক সিটকোই
রুমাল মুখে দূরে হতে।

যখন তুমি কাপড় বোনো 
তাতের কলে রাতটি জেগে,
তখন আমি পুচকি হয়ে
খুজছি মলে সুজয় দা কে।

যখন তুমি মালের বোঝা
তুলছো পিঠে পেটের দায়ে,
তখন আমি স্ট্যাটাস দেখি
ফেসবুকেতে তাকিয়ে ঠায়ে।

যখন তুমি পুজোর জামা
দাওনি ছোটো মেয়ের হাতে,
তখন আমি টাকা ওড়াই 
বন্ধু নিয়ে রেস্তোরাতে।

এমন করেই হাজার তুমি
আছো যেন আমার মাঝে।
আসবে কবে সেদিন যেদিন
যাবো মিশে সমান সাজে?

Saturday, September 7, 2019

September 07, 2019

Shantir Sadh

শান্তির সাধ
 

রাতের তারা গ্রাস করেছে,
আলোর ছটা হারিয়ে গেছে ,
রাহু নাকি চাদ গিলেছে
লেগেছে আজ গ্রহন।

সবাই শুধু পরকে দেখে
নিজের দিকে চায়না ফিরে,
গ্রহন যে আজ বিশ্ব জুড়ে
দেখনা মেলে নয়ন।

অন্নাভাবে দেশ ডুবেছে,
হিংসাতে কত লোক মরেছে,
ধর্ম নিয়ে সন্ত্রাসবাদ
বলতে মোদের বারন।

আশায় শুধুই বেড়াই ঘুরে
আসবে কবে সুদিন ফিরে,
হাসবে সবাই জগত জুড়ে,
ভুলবে দুখের দহন।



Sunday, September 1, 2019

September 01, 2019

Water Crisis

জলসঙ্কট



জলের অপর নাম জীবন কিন্তু প্রায় সারা বিশ্বই  ভুগছে কঠিন জলসঙ্কটে।আমাদের দেশ ভারতও এই সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পায়নি।WHO বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে প্রতিটি মানুষের প্রতিদিন  প্রায় 25 লিটার জলের প্রয়োজন হয়।কিন্তু ভূ গর্ভস্হ জলের দ্বারা সেই চাহিদা পূরন করা প্রায় দুস্কর হয়ে উঠেছে।কয়েকদিন আগে পাওয়া খবর অনুযায়ী চেন্নাই তে পাবলিক পাম্প থেকে জল আনার জন্য শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলকেই লাইনে দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে ভোর 4 টা থেকে 8 টা পর্যন্ত।সূর্যের প্রখর তাপের মধ্যেও তাদের লাইনে দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।এই একই চিত্র দেখা যাচ্ছে মধ্যপ্রদেশ,মহারাষ্ট্রে।


NITI Aayog এর Report অনুযায়ী ভারত ইতিহাসের সবথেকে বড় জলসঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে,যদি এখন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তবে 2030 সালের মধ্যে ভারতে আর পানীয় জল থাকবে না।ভারতের প্রায় 60 কোটি মানুষ তীব্র জলসঙ্কট ভোগ করছে এবং প্রায় 2 লক্ষ মানুষ প্রতি বছর মারা যায় শুধুমাত্র দূষিত জল পান করার জন্য।এই Report এ আরও বলা হয়েছে যে 2020 সালের মধ্যে দিল্লি,ব্যাঙ্গালোর,চেন্নাই,হায়দ্রাবাদ সহ ভারতের 25 টি শহরে ভূ-গর্ভস্থ জল শেষ হয়ে যাবে।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে 'জল শক্তি' প্রকল্প করার কথা বলা হয়েছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে 2024 সালের মধ্যে ভারতের প্রতিটি বাড়িতে পাইপ লাইনের দ্বারা জল সরবরাহের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
আবার অন্যদিকে পৌরসভা গুলিতে জলের জোগান দেওয়ার জন্য ট্যাঙ্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে কিন্তু সেই ট্যাঙ্কারের জন্য বিপুল মাত্রায় জল মাটির নীচ থেকে তুলে ফেলা হচ্ছে যার ফলে জলস্তর আরও নীচে নামছে।

এই জলসঙ্কটের আরও একটি কারন হল পুকুর ভরাট করে বহুতল নির্মান।সমীক্ষায় দেখা গেছে গত 30 বছরে উত্তর প্রদেশ ও বিহারে পুকুরের সংখ্যা বিশাল মাত্রায় হ্রাস পেয়েছে।আর একটি কারন হল সাবমার্সিবলের বহুল ব্যবহার,নতুন এই জনপ্রিয় প্রযুক্তির মাধ্যমে বিপুল মাত্রায় জল তোলা হচ্ছে,এর ফলে অদূর ভবিষ্যতে জলসঙ্কটের সম্ভাবনা আরও তীব্র হচ্ছে।
সুতরাং,এখনই উচিত সরকারের এই গভীর সমস্যায় দৃষ্টি আরোপ করা এবং বিশাল মাত্রায় জন সচেতনতা গড়ে তোলা।

*সমগ্র ছবি ও তথ্য ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত।ধন্যবাদ।
September 01, 2019

Srishti Episode:1

সৃষ্টি

পর্ব-১: বেশধারন

আজ রবিবার,ছুটির দিন।বিকেল বেলা নবীন তাই তার দুই ছেলে মুম্বা আর গিগা কে নিয়ে বাড়ির সামনের বাগানটায় ক্রিকেট খেলছে আর স্ত্রী রূপসা একটু দূরেই বাগানের লোহার বেঞ্চটাতে বসে উল দিয়ে বুনে কী একটা সোয়েটার না মাফলার বানাচ্ছে আর বাড়ির পোষা কুকুর জিঙ্গো তার পায়ের কাছে বসে ঝিমুচ্ছে,জিঙ্গো কিন্তু এমনিতে এমন ল্যাদখোর নয়,এই আগের রবিবারেও ক্রিকেট খেলার সময় সে গিগাকে মুখ দিয়ে বল এনে দিয়েছে,সারা বাগান জুড়ে ছুটে বেরিয়েছে,কিন্তু দুদিন ধরে কীযেন হয়েছে তার,সারাদিন এমন ঝিম ধরে থাকে আর রাত হলেই একটু পর পর ঘেউ ঘেউ করে ওঠে।তাই রূপসা ঠিক করেছে কাল জিঙ্গো কে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে।

এমনি অন্য দিন গুলোতে নবীন অফিসের কাজের জন্য বেশী সময় পায় না,কিন্ত রবিবার পুরো দিনটাই সে তুলে রাখে তার পরিবারের জন্য,হয় সে ছেলেদের সাথে খেলে না হলে কাছাকাছি কোথাও ঘুরতে যায় আর যদি ছুটিটা একটু বেশি দিনের জন্য থাকে তাহলে গিয়ে তার মা,বাবা,দাদা,বৌদি, ভাইঝি সুমির সাথে দেখা করে আসে,নবীন তার এই চাকরিটার জন্যই বাড়ি থেকে দূরে এই মফস্সলে এসে রয়েছে,জায়গাটার নাম সারনা খুব সুন্দর জায়গা তাই সরকারি কোয়ার্টার ছেড়ে সে এইখানে বাড়িটা বানিয়েছে।

আকাশ পরিস্কার,শরতের ঠান্ডা হাওয়া বইছে,এরই মধ্যে খেলা বেশ জমে উঠেছে,মুম্বা পর পর ছয় মারছে,গিগা আর তাদের চাকর বৃন্দাবন কোনোমতেই তাকে আউট করতে পারছে না আর নবীন উইকেট কিপিং করছে এইভাবে আধ ঘন্টা পর বৃন্দাবনের একটা ক্যাচ আউটের সৌজন্যে মুম্বা আউট হল আর রাগে বিরবির করে কী যেন একটা বলতে বলতে ব্যাট টা মাটিতে আছাড় মেরে ফেলে দিয়ে বৃন্দাবনের কাছ থেকে বলটা হাতে নিলো।

গিগা গিয়ে ব্যাট টা তুলে নিয়ে দাড়াল, এখন সে ব্যাটিং করবে,সেও খুব সিরিয়াস তার খেলার ব্যাপারে এতক্ষন ধরে মুম্বা তার থেকে একবছরের ছোট হওয়া সত্ত্বেও খুূব খাটিয়েছে, এখন তাকে দাদা হিসেবে তার দাদাগিরিটা দেখাতেই হবে।

 হঠাত দেখা গেল পরিষ্কার আকাশ টা কালো মেঘে ঢেকে গেছে,একেবারে ঘোর অন্ধকার চারিদিক ছেয়ে ফেলেছে,এমন মেঘ বহুকাল পর দেখল নবীন আর রূপসা।রূপসা তার উল বোনা থামিয়ে বলল 'চলো,অনেক হয়েছে খেলা,এখন রাখো' গিগা চেচিয়ে বলল 'থামো না মা,এই তো ব্যাট টা পেলাম' রূপসা বলল 'ঠিক আছে,আমি ভিতরে যাচ্ছি তোমরা তাড়াতাড়ি এসো' এই বলে সে বাড়ির ভিতরে গেল ছাদ থেকে জামাকাপড় আনতে জিঙ্গো ও তার পিছন পিছন ছুটলো।

এবার মুম্বা বল করলো গিগা আস্তে করে বলে ব্যাট টাকে ছোয়ালো কিন্তু বলটা বেশি দূর গেলো না তাই গিগা আর রান নিলো না,এবার পরের বলটা করলো মুম্বা, গিগা সজোরে বলটা মারলো বাড়ির বারান্দা পার করে একেবারে বাড়ির ভিতরে বলটা চলে গেল মুম্বা ছুটলো বলটা আনতে একেবারে বসার ঘরে বলটা গিয়ে পড়েছে।

এই ঘরে সব দেয়ালে শুধু তাদের ছবি যেগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ ছবি গুলোই রূপসা আর নবীনের একসাথের ছবি কোনোটা তাদের বিয়ের আগের প্রেম করার ছবি আর কোনোটা বিয়ের পরের।
এমন সময় বল নিতে আসা মুম্বা কিছু একটা দেখে ভীষন জোরে চিতকার করে উঠল আর তখনই বাইরে বৃষ্টি শুরু হল আর বিদ্যুত চমকাতে লাগল আর সারা বাড়িতে লোডশেডিং হয়ে গেল।তার চিতকার শুনে সকলেই ছুটে এল রূপসা এসে মুম্বাকে কোলে নিয়ে বলতে লাগলো 'কী হয়েছে বাবা?কী হয়েছে?এই তো আমি।'

মুম্বা কিছু বলছে না শুধু ফোপাচ্ছে,সারা ঘর জুড়ে অন্ধকার,কিছুই ভালো করে দেখা যাচ্ছে না।এতক্ষনে নবীন আর গিগাও এসে গেছে আর বৃন্দাবন গেছে জেনারেটর টা চালিয়ে দিতে,জেনারেটর চালাতেই সারা ঘর আলো হল ,আলো জলার সাথে সাথে সকলের চোখ গেল দেয়ালের ছবি গুলোর দিকে ,আর তারা যা দেখল তাতে মাথার উপর আকাশ ভেঙে পড়ার জোগাড়।

দেখল প্রতিটা ছবিতে নবীনের চোখ,নাক,মাথা দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে আর রূপসার ছবিগুলোতে রক্ত দিয়ে কে যেন সিদুর পড়িয়ে দিয়েছে।এই দৃশ্য দেখে সবাই চুপ হয়ে গেল সবার মুখে একটা ভয় আর শঙ্কা মেশানো ভঙ্গি।শুধু জিঙ্গো এসে ভীষন জোরে ঘেউ ঘেউ করতে লাগল যেন সে কী একটা তাড়ানোর প্রানপন চেষ্টা করছে।

Saturday, August 10, 2019

August 10, 2019

Babar Ali - World's Youngest Headmaster

Babar Ali - World's Youngest Headmaster





ভারতবর্ষ বিশ্বের অন্যতম প্রগতিশীল দেশ হওয়া সত্ত্বেও ভারতের শিক্ষার হার 74.04% ।বিশ্বের প্রাপ্তবয়স্ক অশিক্ষিত দের 37% ই ভারতীয় যেই সংখ্যাটা প্রায় 287 মিলিয়ন।এই ভারতেরই পশ্চিমবঙ্গের একটি পিছিয়ে পড়া জেলা মুর্শিদাবাদ এই সেই মুর্শিদাবাদ যেখানে থাকতেন মহাশ্বেতা দেবীর মতো লেখিকা,জন্মেছিলেন নবারুন ভট্টাচার্যের মতো লেখক,অরিজিত সিং,শ্রেয়া ঘোষালের মতো সঙ্গীতশিল্পী আর জন্মেছিলেন এখন যার কথা আপনাদের বলবো তিনি।নাম বাবর আলী,জন্ম মুর্শিদাবাদ জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম ভাবতায় (মুর্শিদাবাদের জেলা শহর বহরমপুর থেকে  14 কিলোমিটার ভেতরে) 1993 সালের 18 ই মার্চ।বাবার নাম মহঃ নাসির উদ্দিন পেশায় পাট ব্যবসায়ী মা বানাউরা বিবি।
বাবর ছিলেন তাদের গ্রামের যে সব শিশুরা স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল তাদের মধ্যে একজন।তাকে বাড়ি থেকে 8 কিলোমিটার বাসে আর 2 কিলোমিটার পায়ে হেটে স্কুলে যেতে হত।
ক্লাস 5 এ পড়া ছোট্ট বাবর দেখত যে এলাকায় তার সমবয়সী ছেলেমেয়েরা স্কুলে না গিয়ে কেউ মাঠে কাজ করছে,কেউ যাচ্ছে শহরে কাগজ কুড়োতে আবার কেউ বা বাঁধছে বিড়ি।এলাকার সেই সব ছেলেমেয়েরাই হয়ে ওঠে তার বন্ধু।মাত্র নয় বছর বয়সের বাবর স্কুল থেকে ফিরে তার বন্ধুদের নিয়ে খেলত কিন্তু সেই খেলা আর পাচটা শিশুদের খেলা ছিল না।সে খেলত মাস্টার ছাত্র খেলা ,বাবর হতো মাস্টার আর সেই সব স্কুলে না যেতে পারা ছেলেমেয়েরা হত ছাত্র,সে তার স্কুল থেকেই আনতো পড়ানোর জন্য চক।এই ভাবেই খেলার ছলে চলতে থাকা শিক্ষকতা যা কয়েকদিনের মধ্যেই তার নেশায় পরিনত হয়,তিনি 2002 সালে গড়ে তোলেন 'আনন্দ শিক্ষানিকেতন'।


তিনি তখন কোনো সরকারি সহায়তা বা কোনো আর্থিক সহায়তা পাননি নিজের অর্থ দিয়েই চালাতেন তার স্কুল।তবে কয়েক বছরের মধ্যেই তার নাম ছড়িয়ে পড়ে,আসতে থাকে নানারকম সহযোগীতা,রামকৃষ্ন মিশনের মতো প্রতিষ্ঠানও এগিয়ে আসে। কেউ বই,কেউ টাকা দিয়ে সহযোগীতা করতে থাকে 'আনন্দ শিক্ষানিকেতন'কে।তবে তার এই স্কুল তৈরীর পথ মোটেই সহজ ছিল না,ছিল নানা রকম প্রতিকূলতা,সে চাইতো যে ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েদের প্রয়োজন শিক্ষার,কিন্তু তাদের অভিভাবক দের কাছে শিক্ষা ছিল শুধুই শৌখিনতা।কিন্তু থেমে না থেকে বাবর তাদের বোঝান শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা।এভাবেই তার ছোট্ট স্কুল আজ পরিনত হয়েছে প্রায় 500 জনের স্কুলে।
তার ছাত্রছাত্রীরা আজ কলেজে পড়ে আবার তাদের কেউ কেউ এই স্কুলে শিক্ষকতাও করে।তবে তার স্কুলে মেয়েদের হার ছিল কম কারন গ্রামের গরীব মেয়েদের পরিবার চাইত যে মেয়েদের পড়ে কাজ নেই মেয়েদের একমাত্র কাজই হল বিয়ে কিন্তু বাবর তাদেরকেও শিক্ষার গুরুত্ব বোঝাতে সক্ষম হয় আজ তার অনেক ছাত্রীই কলেজে পড়ে আবার তার স্কুলে এসেও পড়ায় আর স্কুলে মেয়ে ছাত্রী 60% আর ছেলেরা 40%।আর যার কথা না বললেই নয় তিনি হলেন টুলু হাজরা পেশায় মাছ ব্যাবসায়ী এই মহিলা তিনি সারাদিন মাছ বিক্রি করে নিয়মিত স্কুলে এসে কাজ করেন আর বাবর কে একেবারে প্রথম থেকে উত্সাহ ও সহযোগীতা করে আসছেন তিনি।
বাবর তার এই শিক্ষতার মাঝে তার পড়াশোনাটাও চালিয়ে গেছেন তিনি প্রথমে বেলডাঙ্গার কাশিমবাজার রাজ গোবিন্দ সুন্দরী হাইস্কুলে পড়াশোনা করেন পরে তিনি বহরমপুরের কৃষ্নাথ কলেজ থেকে ইংরেজী নিয়ে বি.এ এবং কল্যানী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজীতে এম.এ পাশ করেন।তার বাড়ির পিছনে গড়ে ওঠা স্কুল 2015 সালে West Bengal School Education Department এর অন্তর্ভুক্ত হয় এবং প্রাইভেট স্কুলের স্বীকৃতি পায় আর তার স্কুলের জন্য তার গ্রামেই একটি পাকা বিল্ডিং তৈরী করে দেওয়া হয়।
2009 সালে BBC তাকে বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ প্রধান শিক্ষকের উপাধিতে ভূষিত করে।তখন থেকেই দেশে বিদেশে ছড়িয়ে পড়তে থাকে তার খ্যাতী।সেই বছরই তিনি CNN-IBN এর পক্ষ থেকে পান Real Heroes  পুরস্কার,NDTV র পক্ষ থেকে পান Indian of the year  পুরস্কার।ROTARY INDIA LITERACY MISSION  এর পক্ষ থেকে পান LITERACY HERO AWARD। FORBES ASIA র 30 under 30 এর তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।2019 সালে পান World Peace Camping Award 
এবং আরও অনেক দেশী বিদেশী সম্মান ও পুরস্কার।এছাড়াও তিনি একজন Motivational Speaker এবং একজন TED fellow ও INK fellow,তিনি আমির খান কর্তৃক উপস্থাপিত 'সত্যমেব জয়তে' অনুষ্ঠানেও তার গল্প বলে এসেছেন।ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও কর্নাটক স্টেট বোর্ডের বইতে তার জীবনী পড়ানো হয়।
স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রানীত বাবর 'সবার জন্য শিক্ষা' কেই তার জীবনের লক্ষ্য মনে করেন।
                 

*সমগ্র ছবি ও তথ্য Internet থেকে সংগৃহীত।            

Friday, August 9, 2019

August 09, 2019

Mukhomukhi

মুখোমুখি

মাস খানেক আগে কেনা গাড়িটা চালিয়ে অসীম অফিসের পার্টি থেকে বাড়ি ফিরছে,সে একটা নাম করা সফ্টওয়্যার কোম্পানিতে চাকরি করে,সেই কোম্পানির বস্ এর বিবাহ বার্ষিকীর পার্টি তেই গিয়েছিল সে।এমনিতে সে মদ না খেলেও কলিগ রা জোর করায় বেশ কয়েক পেগ বিলিতি মদ উদরে ঢেলেছে সে, এতক্ষন সেই মদের নেশার রেশ না পেলেও এখন গাড়ির স্টিয়ারিং ঘোরাতে ঘোরাতে বেশ টের পাচ্ছে।বাড়ির দিকে বেশ অনেকটা পথ চলে এসেছে সে আর মিনিট পনেরোর মধ্যেই বাড়ি পৌছে যাবে।তবে সামনের দিক কার রাস্তাটা বেশ অন্ধকার সেখানে একটা মোড়ের মত রাস্তা থেকে একটু দূরেই কয়েকটা বড় বড় বাড়ি,দূরের ল্যাম্পপোস্টের আলোতে শুধু এটুকুই দেখা যাচ্ছে, আর একটু যেতেই অন্ধকারে কিছুই চোখে পড়ছে না অসীমের,তখন তার হঠাৎ চোখ পড়ল তার গাড়ির সবুজ আলো জ্বলা ঘড়িটার দিকে সেখানে সময় দেখাচ্ছে রাত সাড়ে বাব়োটা,তখন সে ভাবল এত রাতে এই অন্ধকার রাস্তায় কোনো মানুষ থাকবে বলে তার মনে হয় না, তাই সে তার গাড়ির স্পিড টা 50 থেকে বাড়িয়ে সোজা 80 করে দিল,আর পিছনে তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করল পার্টি থেকে ফেরার সময় যেই মদের বোতল আর কষা মাংস গুলো নিয়ে এসেছিল তা ঠিক ঠাক আছে কি না। তখনি কি যেন একটা গাড়ির ডান দিকের চাকার নীচ দিয়ে সজোরে বারি লেগে ছিটকে গেল,তখন তার মনে হল যে গাড়ি থামিয়ে একবার নেমে গিয়ে দেখবে যে,তার গাড়ির নীচে কী পড়ল,সেই মত গাড়িটাও স্লো করল,কিন্তু পরক্ষনেই মনে হল এত রাতে এই অন্ধকার রাস্তায় নামা মোটেও নিরাপদ হবে না আর এত রাতে কোনো কুকুর ছাড়া অন্য কিছু তার গাড়ির তলায় পড়বে বলে তার মনে হল না, তাই সে তার গাড়ির গতি আবার বাড়িয়ে দিলো। পাঁচ মিনিট পরেই তার গাড়িটা হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেল, তবে এখন সে অন্ধকার পথ পাড় করে অনেকটাই দূরে চলে এসেছে।গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির সামনের এই তার ঐ তার ধরে নাড়াচাড়া করতে লাগল, কিন্তু কিছুতেই কিছু হল না,তারপর সে বুঝল যে এই গাড়ি ঠিক হবার নয়। 
তারপর তার হঠাৎ চোখ পড়ল যে একটু সামনেই একটা ধাবা খোলা আছে,হাটতে হাটতে গেল ওই ধাবায়,তখন সেখানে গিয়ে দেখল যে একটা বেশ মোটাসোটা,বড় গোফওয়ালা লোক খালি গায় চেয়ারে বসে আছে আর খাতার মধ্যে কী যেন হিসাব করছে,অসীম মনে মনে ভাবল যে এই লোকটাই হয়ত ধাবার মালিক, গিয়ে লোকটাকে বলল ''দাদা আশেপাশে কি কোন মেকানিক পাওয়া যাবে,আসলে খুব বিপদে পড়েছি,ঐ যে আমার গাড়িটা দেখছেন,স্টার্ট নিচ্ছে না।'' লোকটা মাথা বাড়িয়ে গাড়িটার দিকে তাকিয়ে বলল ''হ্যাঁ,মেকানিক একটা আছে বটে কিন্তু ঐ ব্যাটা তো এতক্ষণে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে, তবে আপনি যখন এত করে বলছেন,আমি লোক পাঠিয়ে ওকে ডেকে পাঠাচ্ছি, ততক্ষন আপনি ভেতরে গিয়ে বসুন।''তখন অসীম ভেতরের দিকে গেল।তখনই লোকটা জোরে ডাকল ''ছোটু,ঐ ছোটু'' সাথে সাথে একটি বছর পনোরোর ছেলে তার সামনে দিয়ে মালিকের কাছে গেল, তারপর মালিক ছোটুকে কি যেন বলল যা অসীম দূর থেকে ভালো শুনতে পেল না, কিন্তু ছোটু যখন মালিকের দেওয়া টর্চ টা নিয়ে রাস্তার দিকে গেল তখন সে বুঝল যে,মেকানিক কে ডাকতেই সে গেল।
এরপর অসীম ভিতরের দিকে তাকিয়ে দেখল যে ধাবায় প্রায় 20 টার মতো টেবিল আছে, আর তার প্রায় সবকটাতেই লোক বসে আছে, কেউ খাচ্ছে আবার কেউ গল্প করছে, সম্ভবতঃ এরা সবাই বাইরে যে ট্রাকগুলো আছে সেগুলোর ড্রাইভার। সে তখন দেখল যে একেবারে পেছনের দিকে,কোনায় একটা টেবিল ফাকা আছে সে ওখানে গিয়ে বসল।বসে বসে সে পকেট থেকে তার মোবাইল টা বের করে ঘাটাঘাটি করতে লাগল, কিছুক্ষণ পরেই তার চোখ দুটো ঘুমে বন্ধ হয়ে এল,আর টেবিলের উপর মাথাটা নামিয়ে ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল।মিনিট পাচেক পরেই হঠাৎ তার মনে হল কে যেন তার সামনের চেয়ারটায় এসে বসল তখনই তার ঘুমটা ছুটে গেল, সে চোখ দুটো খুলতে খুলতে উঠে বসল আর দেখল সামনের টেবিলে এক ভদ্র লোক বসে আছে,আর তার দিকে একনজরে তাকিয়ে আছে, লোকটির কপালে একটা দাগ আছে,বয়স অসীমের মতই হবে, কিন্তু লোকটার চোখ দুটো তার খুব চেনা,কিন্তু সে কিছুতেই মনে করতে পারছেনা লোকটাকে কোথায় দেখেছে।লোকটা এখনও তার দিকে তাকিয়ে আছে দেখে অপ্রস্তুত হয়ে লোকটাকে জিগ্গেস করল "কি? কিছু বলবেন?" 
লোকটিও একগাল হেসে জবাব দিল"আচ্ছা আপনার নামকি অসীম চৌধুরী?আপনি কি মডার্ন হাইস্কুলে পড়তেন?"
অসীম বলল "হ্যাঁ" 
সঙ্গে সঙ্গে অসীমের চোখ গেল লোকটার ডানদিকের গজ দাতটার দিকে আর তখনই যেন তার সারা শরীরে বিদ্যুত খেলে গেল,কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম বেরিয়ে এল, আর মনে পড়ে গেল স্কুলের সেই ছেলেটার কথা যে আজ 15 বছর পর তার সামনে বসে আছে, মোটা হওয়ায় আর চুল বড় হওয়ায় তাকে চিনতে পারেনি সে ,লোকটার নাম নিখিল নিয়োগী,তার সাথেই স্কুলে পড়ত, আর তার আরও মনে পড়ল স্কুলের সেই দিনটার কথা,
তারা তখন ক্লাস 11 এ পড়ে,আর নিখিল তার নতুন ক্যামেরা ওয়ালা মোবাইল টা নিয়ে স্কুলে এসেছে, আর সেটা দেখাতে নিয়ে গেছে তার বন্ধু অসীম কে। তবে আজ ফোনটা নিয়ে আসার অন্য একটা কারন আছে কারন অসীমের ইচ্ছে যে মোবাইল টা সেট করবে মেয়েদের বাথরুমে আর এমন জায়গায় রাখবে যাতে সেটা কারও চোখে না পড়ে কিন্তু সেই মোবাইলে যেন সব রেকর্ড হয়।নিখিল বার বার বারন করা সত্ত্বেও অসীম কিছুই শোনেনি 
সে শুধু বলেছে "যে তুই কোনো চিন্তা করিস সব আমিই তো করব"।
যেমন কথা তেমন কাজ অসীম মোবাইল টা স্কুল শুরু হবার সময়ই মেয়েদের বাথরুমে রেখে আসে, কিন্তু সবসময় কি সব প্ল্যান পূর্নতা পায়? ঘন্টাখানেক পরেই একটা মেয়ে দেখে ফেলে সেই ক্যামেরা,সাথে সাথে নিয়ে যায় হেডমাস্টারের কাছে।হেডমাস্টার জানতে পারে যে মোবাইল টা নিখিলের, ডেকে পাঠায় তাকে, তারপর আসে পুলিশ, কিন্তু সে বারবার বলার চেষ্টা করে যে একাজ সে করেনি ,কিন্তু কেউ তার কথা শোনার প্রয়োজন মনে করেনি, পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায়,সেখানে তাকে পুলিশ খুব মারে,সেদিনের কপালে মারের দাগটা এখনও আছে,পরে যখন তাকে আদালতে তোলা হয়, সেখানে অসীম ও যায়, তাকেও জেরা করা হয় কিন্তু সে তার দোষ অস্বীকার করে। বিচারে নিখিলের জেল হয়। তারপর অসীম আর তার খোঁজ করেনি।অসীম প্রায় মিনিটখানেক ধরে এসব ভাবছিল কিন্তু নিখিল তাকে জোরে বলে উঠল "কী রে আমাকে চিনতে পারিস নি" 
অসীম জবাব দিল "হুম, পেরেছি, তা কেমন আছিস বল?"
নিখিল বলল"যেমন রেখেছিস"
"অনেক দিন তোর কোনো খবর পাই নি, জেল থেকে ফিরে কী করেছিস? "অসীম বলল।
নিখিল জবাব দিলো "ঐ তো একটা ব্যবসা শুরু করেছিলাম, টাকাও অনেক কামিয়েছিলাম, কিন্তু জুয়ার নেশা জেল থেকে লেগে গেছিল, তাতেই সব শেষ, কদিন আগেই বাড়িটাও নিলাম হয়ে গেছে, এখন এদিক ওদিক ঘুরে বেরাই।আমার কথা বাদ দে, তোর খবর বল"
অসীম বলল, "বছর দশেক হল একটা সফ্টওয়্যার কোম্পানি তে কাজ করছি।তুই বিয়ে করিস নি?"
নিখিল বলল "না,তুই?"
উত্তর এল"করেছিলাম,এখন ডিভোর্স হয়ে গেছে"
নিখিলের হঠাৎ চোখ দুটো লাল হয়ে গেল, আর তার মুখে একটা দারুন রকম খুশির হাসি ফুটল,আর বলল"আমার জীবনটা শেষ করে,নিজেও খুশি হতে পারিস নি তাহলে"অসীমের চোখ দুটো জলে ভরে গেল আর বলল"তুই চল আমার সাথে, আমার বাড়ি, আমাকে একটা ভুল শোধরাবার  সুযোগ দে।"নিখিল অট্টহাসি দিয়ে বলল "সে সুযোগ তো তুই নিজেই হারিয়েছিস রে,গাড়ির চাকায় যে পিশে আমাকে শেষ করে দিয়েছিস।"
অসীম বলল " কী সব আলফাল বকছিস, কিচ্ছু বুঝতে পারছিনা। " 
নিখিল বলল "বুঝতে চাইলে টেবিলের নীচে আমার পা দুটো দেখ"
অসীম সেই মত টেবিলের নীচে তাকিয়ে দেখল নিখিলের কোমরের নীচ থেকে একেবারে থেতলে গেছে,শুধু কালো কালো রক্ত। সে বুঝল অন্ধকার রাস্তায় যাকে গাড়ি দিয়ে ছিটকে দিয়েছিল সে আর কেউনা সে হল নিখিল। যখন টেবিলের নীচ থেকে উঠে উপরে উঠল দেখল সামনের টেবিলটা ফাঁকা কেউ নেই এই দেখে সে অচেতন  হয়ে টেবিলের উপর পড়ে গেল। কিছুক্ষন পরে যখন তার জ্ঞান ফিরস তখন সে চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে এদিক ওদিক নিখিল কে খুঁজতে লাগল।তখন ছোটু তার সামনে দিয়ে গেল কিন্তু তাকে না দেখার ভান করে তার টেবিল টার দিকে চলে গেল আর কাকে যেন বলতে লাগল "স্যার,ও স্যার উঠুন গাড়ি ঠিক হয়ে গেছে।" 
অসীম এগিয়ে গেল ঐ টেবিল টার দিকে আর যা দেখল তাতে তার চক্ষু চড়কগাছ।সে দেখল তার মতন দেখতে একটা লোক টেবিলের উপর পড়ে আছে আর তাকে ছোটু শুধু ডেকেই যাচ্ছে কিন্তু সে উঠছে না।এরই মধ্যে ছোটুর আওয়াজ শুনে তার মালিক সেখানে আসে আর অসীমের শরীরের মধ্যে দিয়ে ভেদ করে টেবিলের উপর থাকা দেহটার নাড়ি টিপে বলে "মালটা, টিকিট কেটেছে"
 তখন অসীম বুঝতে পারে যে সে আর মানুষ নেই,নিখিলের পা দেখে ভয় পেয়ে হার্টফেল করে আত্মায় পরিনত হয়েছে। 
              
                                 সমাপ্ত

সম্পূর্ন গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

Thursday, August 8, 2019

August 08, 2019

Purushottam (1992) - Movie Review

পুরুষোত্তম (1992) Review

এখন যেই সিনেমার ব্যাপারে বলবো সেই সিনেমার নাম হয়তো এখনকার প্রজন্মের খুব কম জনই শুনেছে কিন্তু,আমার মতে ছবিটি বাংলার underrated সিনেমার মধ্যে একটি।ছবিটির নাম পুরুষোত্তম।এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন প্রসেনজিত্ চ্যাটার্জ্জী,দেবশ্রী রায়,অভিষেক চ্যাটার্জ্জী,কালী ব্যানার্জী,প্রসেনজিত্ এর বোন পল্লবী আর বেশ কয়েকজন  উড়িষ্যার অভিনেতারাও ছিলেন।ছবির প্রযোজক আর পরিচালক দুই ই ছিলেন প্রসেনজিত্,তিনি মোট দুটি ছবিই পরিচালনা করেছিলেন একটি এই পুরুষোত্তম অন্যটি 1998 সালে মুক্তিপ্রাপ্ত 'আমি সেই মেয়ে',আর এই পুরুষোত্তম মুক্তি পেয়েছিল 1992 সালে ,তখন তার বয়স ছিল 30 বছর আর এই কম বয়সের জন্যই হয়ত যখন বাংলায়  Commercial সিনেমায় 'মন মানেনা' বা 'আপন পর' এর মত Rom-Com আর 'রক্তে লেখা' র মতো Family Drama রমরমিয়ে চলছে তখন পুরুষোত্তমের মতো Action Crime Thriller তৈরী করার Risk নিতে পেরেছিলেন।তবে তখনকার Bollywood এর Ghayal,Ghatak,Shiva এর মতো সব সিনেমাগুলিও রসদ জুগিয়েছিল যার ছাপ ছবিতে লক্ষ্য করা যায়।1992 সাল যখন প্রসেনজিত্ বাংলার Top নায়কদের মধ্যে এসে গেছেন তার কাছে এই সালটা আরও একটা কারনের জন্যও গুরুত্বপূর্ন কারন এই বছরই তিনি বিয়ে করেন এই ছবির নায়িকা দেবশ্রী রায়কে।এবার সিনেমার গল্পের কথায় আসা যাক কাহিনী লিখেছিলেন পিঙ্কু দাস আর চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছিলেন অসিত বসু।গল্পে দেখানো হয়েছে কিভাবে একটি কলেজে পড়া ছেলে Crime এর সাথে জড়িয়ে পড়ে আর তার  কিভাবে পুরোনো প্রেমিকার সাথে দেখা হয়।পুরো গল্পটা বলবো না ছবিটা  Youtube এ আছে দেখে নিতে পারেন।গল্পে খুব বেশি না হলেও কতগুলি Twist আছে যা আরও Engaging করে।এবার আসা যাক অভিনয়ের কথায় প্রসেনজিত্ অনবদ্য অভিনয় করেছেন ও অন্যান্য অভিনেতারা বেশ ভালো অভিনয় করেছেন তবে সবাইকে ছাপিয়ে গেছে ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করা জগন্নাথ গুহ তার চেহারা বা 'জয় জগদম্বে' বলা বেশ ভয়ঙ্কর।ছবির Music দিয়েছিলেন রাহুল দেব বর্ম্মন।কুমার শানুর কন্ঠে "আয় আয় ঘুম আয়" আর আশা ভোঁসলের কন্ঠে "আজ অন্ধকার যতই হোক" গান দুটি শুনতে ভালো লাগে।আর ছবির Background music ও বেশ ভালো।এত ভালোর মাঝেও Technically যেমন  Dubbing আর কালারিং এ কিছু ত্রুটি আছে।তবে আপনার যদি অনুরাগ কাশ্যপের 'গুলাল',রামগোপাল ভার্মার 'সাত্যা' বা হলিউডের 'গডফেলাস' বা 'সিটি অফ গড' বা বাংলার 'ক্রান্তি' র মতো সিনেমা ভালো লেগে থাকে তাহলে এই সিনেমাটিও আপনাদের ভালো লাগবে।আর প্রসেনজিত্ ভক্ত দের উদ্দেশ্যে বলবো যদি Feel good প্রসেনজিত্ এর বদলে একটু Dark প্রসেনজিত্ কে দেখতে চান তাহলে এই ছবিটি আপনাদেরই জন্য।
ধন্যবাদ।

Wednesday, August 7, 2019

August 07, 2019

Megh

মেঘ


মেঘ,তুমি এমন কেন হলে?
কেন আকাশ জুড়ে ছড়িয়ে থেকে বৃষ্টি না দিলে
দিনের আলো,রাতের তারা রাখলে সবই ঢেকে
শুধুই দিলে অন্ধকার এই ধরনীর বুকে।
মেঘ,তুমি এমনটা না ছিলে,
বৃষ্টি ভেজা বাদলা দিন যে যাইনি আজও ভুলে
দিনগুলি যে মনের চোখে আজও ভেসে ওঠে
বর্ষা মেঘের প্রথম কনা পড়ত এসে ঠোটে,
দেখি কোনো খেয়া যেন ভাসতো দাড়টেনে,
পথিক বাশিতে সুর তুলতো একা আনমনে,
গগন হতে বারিধারা পড়ত ঝরে ঝরে,
নদীর জলও উঠত ফুলে কলকলানি করে,
রাখাল কোনো বাড়ির পানে ছুটত আলের পথে,
গাভীর পালও ছুটে যেত তারই সাথে সাথে,
দস্যি মেয়ে নুপূর পায়ে নাচতো উঠোন দিয়ে,
বঙ্গবধূ যেত ভিজে জল আনতে গিয়ে।
সে সব কিছুই পড়ছে মনে যাইনি আজও ভুলে
মেঘ তুমি এমন কেন হলে?
তুমি এমনটি না ছিলে
তুমি এমন কেন হলে?

Tuesday, August 6, 2019

August 06, 2019

Jhilam Nodir Teere

ঝিলাম নদীর তীরে


শীতল বাতাস বলে এসে
পাহাড় চূ়ড়ার কাছে
কোথাও কী এক স্বর্গ আছে
এই ভুবনের মাঝে? 
পাহাড় চূড়া বলে শুধুই
এখন তো নেই ওরে
একটা সময় সেথায় ছিল
ঝিলাম নদীর তীরে। 
পাহাড় ঘেরা বরফ ঢাকা
ঠান্ডা শীতল দেশে,
সেই শান্তি এখন আর নেই
গেছে হাওয়ায় মিশে। 
সেইখানেতে বাস করত
শ্বেতবরনা মেয়ে
নদীর পারে সবুজ মাঠে
যেত সে মেষ নিয়ে। 
চোখ দুটি তার কাজল কালো
কোমর ছাড়া চুল 
হাতে চুড়ি,নাকেতে নথ 
কানেও ছিল দুল।
যুবা মেয়ের বাড়ির পথেই
ছিল সেনার শিবিব়
সেখানকারই নতুন সেনা 
নামটি তাহার প্রবীর।
ফিরান পড়ে মেয়েটি যখন 
সেই পথ দিয়ে যায়
সেনা প্রবীরের মনটি তখন
মেয়েটির হতে চায়।
দিনে রাতে সেনার দলে
শুধুই খুজে বেড়ায়
শত্রু দেশের জঙ্গী নাকি 
লুকিয়ে আছে এ পাড়ায়।
ক্লান্ত প্রবীর দিনের শেষে
যখন ঘুমিয়ে যায়
ঘুমের মাঝে সে তখন
মেয়েটিকে দেখতে পায়। 
প্রবীর ভাবে মেয়েটির সাথে
এবার দেখা হলে
মেয়েটিকে মনের কথা
দেবে গিয়ে সে বলে। 
কদিন পরেই প্রবীর যখন
গেছে ঝিলামের কাছে
দেখে,একটু দূরে মাঠের মাঝে
মেয়েটি দাড়িয়ে আছে।
মেয়েটি যখন অজান্তেই
তাহার দিকে চায়
যুবক সেনা ধীরে ধীরে
মেয়েটির দিকে যায়
বলে,'শোন দুধে সাদা মেয়ে
তুমি আমার বন্ধু হবে?'
মেয়ে বলে,'তোমায় আমি চিনিনা,
বন্ধু হই কীভাবে?'
সেনা বলে,'প্রবীর বসু নামটি আমার
বঙ্গদেশের ছেলে
সেনায় আমি যোগ দিয়েছি
দেশকে ভালোবাসি বলে।'
মেয়ে বলে 'আচ্ছা তবে
বন্ধু হতে পারি
যদি বন্ধু কোনোদিন
না কর আড়ি।'
এরপরে কদিন ধরে
ফাক যখন পায়
প্রবীর তখন মেয়েটির সাথে
দেখা করতে যায়।
মেয়ের মনে ধীরে ধীরে
প্রেমের উদয় হয়
মেয়েটিও এখন যে
প্রবীরকেই চায়। 
এমনভাবেই চলতে থাকে 
ভালোবাসার গাড়ি
প্রবীর বলে তোমায় আমি
বিয়ে করব শিগ্গিরি।
মেয়ে বলে চল তবে
আমার বাবার কাছে
বলবে গিয়ে বিয়ের কথা
দেরি না হয় পাছে। 
কথা মতো দুজন মিলে 
তার কাছে গেল
অনেক রাগারাগি করে
উনি শেষে রাজি হল। 
সেদিন রাতে প্রবীর যখন 
বসে বসে ভাবে
আনন্দেতেই হাসে শুধু
বিয়ের কথা ভেবে। 
এমন সময় হঠাত্ করে
শব্দ হল জোরে
বোমা ফেটে,ক্যম্পটি
তাদের দিল শেষ করে।
কোনো সেনাই নেই যে আর
গেছে সবাই উড়ে
জিহাদিরা জিহাদ করে তাদের
দিয়েছে শেষ করে।
মেয়েটি যখন শুনল এসব
আকাশ ভেঙ্গে পড়ল
অশ্রুচোখে ছুটে তখন
প্রবীরের কাছে গেল।
কোথায় প্রবীর আর তো নেই
গেছে সে হারিয়ে
মানুষ মারার এই খেলাতে
সব সীমানা ছাড়িয়ে। 
এই ঘটনার পরে 
গেছে কয়েক বছর পেরিয়ে
মেয়েটিও অন্যকারও 
বউ হয়েছে গিয়ে,
ভুলে গেছে সে সব কিছুই
হয়তো কিচ্ছু নেই মনে
আসলটাকে আপন করে 
নিয়েছে বুকে টেনে। 
ঝিলাম পারের কাটাতার যে 
যায়নি কিছুই ভুলে
এমন কত প্রবীর আজও
মিশছে দেশের কোলে। 

Sunday, August 4, 2019

August 04, 2019

Anamika

অনামিকা

 গলির শেষে অন্য বেশে
দাড়িয়ে থাকা মেয়ে
একটা সময় স্কুলে যেত
দু-চোখ স্বপ্ন নিয়ে।
হারিয়ে গেছে সে সব কিছুই
সূর্যাস্তের মতো,
এখন সবাই বেশ্যা বলে
বাড়িয়ে তোলে ক্ষত। 
পড়াশোনায় ভালোই ছিল,
মন্দ ছিল না নাচে,
রূপেও ছিল অপরূপা,
চলত নিজের ধাচে।
মা বাবা তার চাকরি করে,
সময় দেয়না মোটে
অভাব যে তার ভালোবাসার
টাকায় কি তা মেটে?
হঠাত্ করে সেই দিনটা
এল যখন চলে
স্কুলের পথে,গোলাপ হাতে
ছেলেটা দিল বলে-
'তুমি কি অামায় ভালোবাসো? 
আমি তোমায় বাসি,'
না বলতে পারল না সে
ঠোটে যে তার হাসি। 
ছেলেটা তো তার অচেনা নয়
অনেকদিনের চেনা
স্কুলেরই সিনিয়ার
নীলদা নামেই জানা। 
তারপর সেই চলতে থাকে
সবার যেমন চলে
লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম পিরীতি
পার্কে,সিনেমা হলে। 
নীল একদিন বলল তাকে
'চল বিয়ে করি'
সে শুধুই বলল হেসে,
'কীসের তাড়াতাড়ি'
সে কিন্তু ভালোই জানে
বাড়িতে নেবে না মেনে। 
নীল যে কোনো কাজ করেনা,
সবাই বেকার বলেই চেনে। 
একদিন নীল বলল যে-সে
চাকরি পেয়ে গেছে,
রাত্রিবেলায় চলে এসো
রেলস্টেশনের কাছে।
রীতিমতো হাজির সে
রাতের অন্ধকারে
নীলের সাথে পালিয়ে গেল
নীল সাগরের পারে,
শহরটাকে বোম্বে বলে,
দুজনাতেই থাকে,
ভালোবাসার নেশায় মেতে
ঘিঞ্জি গলির ফাঁকে। 
মাস দুয়েক তার ভালোই গেল
গলির ছোট ঘরে, 
বাবার ঘড়ি,মায়ের গয়না
এসব বিক্রি করে। 
নীল যে তাকে মিথ্যে বলে
এনেছে এত দূরে
বেকার নামের তকমাটা তার
এখনো যায়নি সরে।
মেয়েটা একদিন ফোন করল
তার মায়ের কাছে, 
বলল-'ভুল হয়েছে ক্ষমা করে দাও
সবাই কেমন আছে?'
মা বলে তার-'চিনিনা তোকে,
আপন যদি হতি,
তবে কি আর মুখে চুনকালি
এমনভাবে দিতি?'
এই সব কিছু সে বলল তখন
নীলের কাছে গিয়ে।
নীল শুনে সব বলল তাকে
মুচকি হাসি দিয়ে
'ভুলটা যখন আমিই করেছি
শোধরাবোও আমি, 
আমার কাছে তুমিই সব
সবের থেকে দামি।'
দুদিন পরে মেয়েটি ঘরে
একলা বসে আছে, 
নীল বলেছে 'বাইরে যাচ্ছি
একটু কাজ আছে।'
ঘন্টাকয়েক পরে যখন
নীল এল ফিরে,
কালো মেঘের ঘনঘটা
তাকে ধরল ঘিরে। 
চারটি ছেলে নীলের সাথে
যখন এল ঘরে,
নীল বলে-'তোমায়,ওদের কাছে
দিয়েছি বিক্রি করে।'
অশ্রু চোখে মেয়ে বলে
'ওগো,আমায় বাঁচাও'
নীল বলে-'তোমায়,
কেউ বাঁচাবেনা। 
যত খুশি চেঁচাও।
বড়লোকের মেয়ে ভেবে
ফাঁসিয়ে ছিলাম তোমায়, 
বাপের বাড়ির ধন-দৌলত
এনে দেবে আমায়।'
তারপর সেই ছেলেগুলো
মেয়েটির মুখ বাঁধে, 
গাড়ির খোপে নিয়ে যায়
তুলে নিয়ে কাঁধে। 
সেই থেকে এই অন্ধগলিই
ঠিকানা যে তার। 
বাড়ি ফেরার কোনোরকম
চেষ্টা করেনি আর। 
জানত সে মা বাবা তার
মেনে নিতেও পারে, 
কিন্তু,সে সমাজ বড়ই পাষান
যাবে দূরে সরে। 
মাস পাঁচেক পরে যখন
ঐ দিনটা এল, 
বেশ্যা মেয়ে মা হয়ে যে
মেয়ে জন্ম দিল।
মা যে আবার বুক বেঁধেছে
মনে সাধ নিয়ে,
স্বপ্নপূরন করাতে হবে
মেয়েটাকে দিয়ে। 
অন্ধগলির মেয়েটি এখন
সেই আশাতেই থাকে
যদি,ডুবে যাওয়া সূর্য
আবার,ওঠে পুবদিকে।